Skip to content
Home » পবিত্র বাইবেল এবং মণ্ডলীর শিক্ষায় অভিষিক্ত যাজক ও যাজকত্ব

পবিত্র বাইবেল এবং মণ্ডলীর শিক্ষায় অভিষিক্ত যাজক ও যাজকত্ব

যাজকবরণ সংস্কার গ্রহণ ও প্রেরণকার্যে অংশগ্রহণের মাধ্যমে একজন খ্রিস্টভক্ত শিক্ষক, যাজক ও রাজা যীশু খ্রিস্টের সেবাকাজের পদে উন্নীত হন। একজন যাজক তাই হতে ওঠেন যীশু খ্রিস্টের সেবাকাজের অংশী![1]অনুচ্ছেদ-১, ভূমিকা, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা অর্থাৎ যাজকগণ খ্রিস্টের নামে ঐশ বাণী ও ঐশ অনুগ্রহ দ্বারা মণ্ডলীকে পরিপুষ্ট করার বিশেষ দায়িত্বে নিযুক্ত।[2]অনুচ্ছেদ-৬, দ্বিতীয় অধ্যায়, লুমেন জেন্সিউম, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভাযাজকগণ খ্রিস্টের নামে জনগণের পক্ষে প্রকাশ্যে প্রেরিতদের দায়িত্ব পালন করেন। পিতা যেমন খ্রিস্টকে পাঠিয়েছেন, তেমনি তিনিও পাঠিয়েছেন প্রেরিতশিষ্যদের।[3]অনুচ্ছেদ-২, প্রথম অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা পুরোহিতদের যাজকত্ব বিশপদের যাজকত্বের সাথে সংযুক্ত বলে পুরোহিতগণ যাজকীয় দায়িত্ব-কর্তব্যে খ্রিস্টের ক্ষমতার অংশীদার।[4]অনুচ্ছেদ-৩, প্রথম অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা পুরোহিতদের সেবাকর্মের লক্ষ্য এবং পরিপূর্ণতা হলো সমস্ত মণ্ডলীর নামে রক্তপাতহীন ও সংস্কারীয়ভাবে খ্রিস্টের বলিদান উৎসর্গ করা কারণ যাজকদের সেবাকর্ম শুরু হয় মঙ্গলসমাচার ঘোষণা করা থেকে এবং গতি ও শক্তি পায় খ্রিস্টের বলিদানে।[5]অনুচ্ছেদ-৫, প্রথম অধ্যায়,প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা

মণ্ডলীতে অভিষিক্ত জন:
কাথলিক মণ্ডলীতে মাত্র তিনটি অভিষিক্ত পদ ও দায়িত্ব বিদ্যমান। খ্রিস্টভক্তগণ পুণ্য পদাভিষেক সংস্কার গ্রহণের মাধ্যমে অভিষিক্ত জন-এর মর্যাদা লাভ করেন। এই তিনটি পদ ও দায়িত্ব হলো: ডিকন, যাজক এবং বিশপ। ব্রাদার ও সিস্টারগণ মঙ্গলসমাচারীয় আদর্শে জীবন-যাপন করার মানসে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন, কিন্তু তারা অভিষিক্ত জন নয়। মণ্ডলীতে বিশপ পদই হলো অভিষিক্ত জনের সর্বোচ্চ মর্যাদা। কোন আর্চডাইয়োসিস-এর বিশপকে আর্চবিশপ বলা হয় কিন্তু অভিষেকের মর্যাদায় তিনিও একজন বিশপ। কার্ডিনালগণ পোপ মহোদয়ের বিশেষ পরামর্শক ও পরবর্তী পোপ নির্বাচক হিসেবে পরিচিত। কার্ডিনাল হিসেবে তাদের ভিন্ন কোন অভিষিক্ত মর্যাদা থাকেনা, তবে কার্ডিনালগণ ইতোমধ্যে যাজক বা বিশপ হিসেবে অবশ্যই পুণ্য পদাভিষেক গ্রহণ করেছেন।

পবিত্র নবসন্ধিতে কাথলিক মণ্ডলীর ঐতিহ্যগত যাজক বা পুরোহিতদের উল্লেখ:

যাজক বা পুরোহিত-এর ইংরেজি প্রতিভাষা priest শব্দটি’র উৎপত্তি হয়েছে গ্রীক শব্দ presbuteras শব্দটি থেকে। এই presbuteras শব্দটি পবিত্র বাইবেলের ইংরেজি অনুবাদে “প্রবীণ” অর্থাৎ “presbyter” হিসেবে লিখিত হয়েছে। বাইবেলে “প্রবীণ”দের প্রেরণকার্য হিসেবে যা বর্ণিত হয়েছে তা থেকেই বর্তমান জগতের কাথলিক মণ্ডলীর যাকজদের প্রেরণকার্য নির্ধারিত হয়েছে। যদিও বাইবেলে যাজকদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে খুবই কম আলোকপাত করা হয়েছে তথাপি শিষ্যচরিত গ্রন্থ থেকে প্রকাশিত হয় যে তারা অর্থাৎ প্রবীণেরা যাজকীয় কর্মদায়িত্ব সম্পন্ন করার অধিকারপ্রাপ্ত ছিলেন।
আদি মণ্ডলীর প্রবীণদের হস্ত স্থাপন করে অভিষিক্ত করা হয়েছিল[6]দ্র: ১ তিমথি ৪:১৪, ৫:২২, তারা তাদের মেষদের নিকট বাণী প্রচার করেছেন ও ধর্ম শিক্ষা দিয়েছেন[7]দ্র: ১ তিমথি ৫:১৭ এবং তারা সংস্কার কাজ সম্পাদন করেছেন[8]দ্র: যাকোব ৫: ১৩-১৫। এই দায়িত্বসমূহই হচ্ছে মূল যাজকীয় সেবাদায়িত্ব। তাই যখনই পবিত্র বাইবেলে গ্রীক ভাষায় presbuteras শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, তা “প্রবীণ” বা “presbyter” হিসেবে অনুবাদ না করে “যাজক বা পুরোহিত” করাটাই যুক্তিযুক্ত, তবে অবশ্যই বাইবেলে presbuteras শব্দটি দ্বারা কিছু ক্ষেত্রে ইহুদী প্রবীণ ধর্মনেতা বা যাজকদের বোঝানো হয়েছে যা সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিক[9]দ্র: মথি ২১:২৩, শিষ্যচরিত ৪:২৩

পবিত্র নবসন্ধিতে কাথলিক মণ্ডলীর ঐতিহ্যগত বিশপদের উল্লেখ:

গ্রীক শব্দ “Episcopos” এর উৎপত্তি হয়েছে দু’টি শব্দের সমন্বয়ে, epi (over) এবং skopeo (to see) থেকে। আভিধানিকভাবে এর অর্থ দাঁড়ায় “পরিচালনা কর্তৃপক্ষ”। বাইবেলে ব্যবহৃত গ্রীক শব্দ “Episcopos” মর্যাদাকেই আমরা বিশপীয় মর্যাদা বলি। Kings James Version বাইবেলে “পরিচালনা কর্তৃপক্ষ”এর দায়িত্বকে গ্রীক Episcopen কে “Bishopric” অর্থাৎ “বিশপীয়” শব্দে অনুবাদ করা হয়েছে[10]দ্র: শিষ্যচরিত ১:২০। নবসন্ধিতে Episcopos এর ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রদান করা হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুতে তা স্পষ্টতা লাভ করে। আন্তিয়োকের সাধু ইগ্নাসিয়াসের রচনায় (১০৭ খ্রিস্টাব্দ) যাজকীয় পদাবলী সমূহ যথেষ্ট স্পষ্টতা লাভ করেছে। তিনি বিশপীয় অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্যকে যাজক এবং ডিকনের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য হতে পৃথকভাবে উপস্থাপন করেছেন[11]দ্র: সাধু ইগ্নাসিয়াস রচিত ম্যাগনিসিয়দের কাছে পত্র ৬:১, ত্রালিয়দের কাছে পত্র … Continue reading

বিভিন্ন মণ্ডলীতে অভিষিক্ত পদ সমূহের প্রচলণ:

নবসন্ধিতে দেখা যায় Episcopos এবং presbuteras শব্দ দু’টি প্রায় সমার্থক বিবেচনায় ব্যবহৃত হয়েছে। একই বিবেচনায় প্রটেস্ট্যান্ট মণ্ডলীতে “minister” শব্দটি দ্বারা অভিষিক্ত এবং অ-অভিষিক্ত সেবাকর্মী উভয়কেই বোঝানো হয় যেমন: senior minister, music minister, youth minister ইত্যাদি। নবসন্ধিতে কিন্তু diakonos শব্দটিও “ডিকন” এবং “minister” এর প্রায় সমার্থক বিবেচনায় ব্যবহৃত হয়েছে। তথাপি প্রটেস্ট্যান্ট মণ্ডলী সমূহে “deacon” এবং “minister” শব্দ দু’টি দ্বারা আলাদা সেবাদায়িত্ব ব্যাখ্যা করা হয়। ক্যাথলিক মণ্ডলী বাইবেলীয় ধর্মতত্ত¡ এবং মণ্ডলীর শিক্ষা অনুযায়ী তিনটি অভিষিক্ত পদ বিশপ, যাজক এবং ডিকন-এর নাম ও সেবাদায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করেছেন। আবার minister হিসেবে অ-অভিষিক্ত ব্যক্তিদেরও বিশেষ সেবাদায়িত্বে ক্যাথলিক মণ্ডলী মনোনয়ন দিয়ে থাকে যেমন: eucharistic minister, music minister, lector ইত্যাদি।

পবিত্র বাইবেলে যাজক, বিশপ এবং ডাইয়োসিস বিষয়ক অধিকতর অনুধ্যান:

শিষ্যচরিত গ্রন্থের ২০: ১৭-৩৮ এ একই ব্যক্তিদের “presbuteroi[12]দ্র: শিষ্যচরিত ২০: ১৭ এবং “Episcopoi[13]দ্র: শিষচরিত ২০: ২৮ হিসেবে অভিহিত করা হলেও শব্দ দু’টি ব্যবহারের ভিন্ন উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট। presbuteroi শব্দটি এ’ক্ষেত্রে নির্দেশ করছে অভিষিক্ত ব্যক্তিদেরকে এবং Episcopoi শব্দটি কি ধরণের সেবাকাজ করতে হবে তার ধরণ নির্দেশ করছে। “তিনি তখন মিলেতাস থেকে এফেসাসে লোক পাঠিয়ে সেখানকার মণ্ডলীর প্রবীণদের (অভিষিক্ত ব্যক্তি) ডেকে পাঠালেন। তাঁরা এসে পৌঁছলে তিনি তাঁদের বললেন:[14]দ্র: শিষচরিত ২০: ১৭-১৮ক ‘… পবিত্র আত্মা যে-সমগ্র মেষপালের সুরক্ষার দায়িত্ব (পরিচালনার দায়িত্ব অর্থাৎ বিশপীয় দায়িত্ব) আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছেন, সেই মেষপালের দিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। পরমেশ্বর তাঁর আপন পুত্রের রক্তমূল্যে যে-মণ্ডলীকে নিজের ক’রে নিয়েছেন, আপনারা তা প্রতিপালন ক’রে যান’[15]দ্র: শিষচরিত ২০: ২৮খ।”

বাইবেলের অন্যান্য অনুচ্ছেদগুলো হতে এটি পরিষ্কার যে, অভিষিক্তজনদেরই Episcopoi নামে অভিহিত করা হয়েছে যাদেরকে একটি নির্দিষ্ট মণ্ডলী (আজ যা ধর্মপল্লী নামে পরিচিত) পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রেরিতশিষ্যরা কিছু ব্যক্তিকে অভিষিক্ত করেছেন যাদেরকে বেশ কয়েকটি মণ্ডলী (আজ যা ডাইয়োসিস নামে পরিচিত) পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যদিওবা ঐ সমস্ত মণ্ডলীতে স্থানীয় প্রবীণেরা অর্থাৎ presbuteroi ছিলেন। একই সাথে মেষপালের যত্ন এবং বাণী প্রচারের প্রয়োজনে আরো প্রবীণ অর্থাৎ যাজক অভিষিক্ত করার ক্ষমতাও তাদের দেয়া হয়েছিল। তীত এবং তিমথি ছিলেন দু’জন আদি episcopoi অর্থাৎ বিশপ এবং তাদের মর্যাদা যে presbuteras এর উপরে তা পবিত্র বাইবেল হতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাদের হাতে অন্যান্য presbuteras মনোনয়ন করে অভিষিক্ত করা এবং পরিচালনা করার কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছিল যার প্রমাণ আমরা দেখি সাধু পলের লেখা পত্রে: “আমি তোমাকে এইজন্যেই ক্রীট দ্বীপে রেখে এসেছি, তুমি যেন …. প্রতিটি শহরের মণ্ডলীতে প্রবীণদের নিযুক্তও করতে পার।”[16]দ্র: তীত ১: ৫ “… কোন প্রবীণের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ গ্রাহ্য ক’রো না, যদি না দু’জন বা তিনজন সাক্ষী সে অভিযোগ সমর্থন করে। যাঁরা বারবার অন্যায় করেন, তুমি সকলের সামনেই তাঁদের তিরস্কার করবে- এইভাবে তুমি বাকি সকলকে সাবধান করে দেবে। …. কারও ওপর হাত রেখে প্রবীণ-পদে অধিষ্ঠিত করার ব্যাপারে কোন রকম দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ো না।”[17]দ্র: ১ তিমথি ৫: ১৭-২২

জগতে পুরোহিত বা যাজকদের স্থান:

পুরোহিত বা যাজকদের বেছে নেয়া হয় জগতের মানুষের মাঝ থেকেই যাদের মধ্যে সাধারণ মানুষের মতই বিদ্যমান সমস্ত উত্তমতা এবং সমস্ত মন্দতা। তাদের অভিষিক্ত করা হয় যেন তারা তাদের মেষপালের জন্য বলি উৎসর্গ করতে পারেন এবং অন্য সব মানুষের সাথে ভাই-এর মত জীবন যাপন করেন। যাজকদের এই ভূমিকার উৎস এবং প্রেরণা হচ্ছে স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রিস্ট যিনি পিতার দ্বারা মানুষের নিকট প্রেরিত হয়ে মানুষের মধ্যেই বাস করলেন এবং পাপ ছাড়া আর যে কোন বিষয়ে সাধারণ মানুষের মত হয়ে উঠেছেন![18]দ্র: হিব্রু ২: ১৭; ৪-১৫

ক্যাথলিক মণ্ডলীতে যদিও যাজকগণ ঐশ জনগণের মধ্যেই বসবাস করছেন তথাপি তারা আবার আলাদাও। এর অর্থ এই নয় যে তাদের মানবিক সত্ত্বা আলাদা বা মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপন করতে হবে। বরং আলাদা এই অর্থে যে, তাদেরকে বেছে নেয়া হয়েছে ঈশ্বরের কাজের জন্য, যার জন্যে তারা সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গীকৃত।[19]দ্র: শিষ্যচরিত ১৩: ২ তারা তখনই যীশু খ্রিস্টের সেবক হয়ে উঠতে সমর্থ হন যখন তারা ঐশ জীবনের বিষয়ে সাক্ষী হয়ে তা জনগণকে চেনাতে সমর্থ হয়ে ওঠেন।

আবার জনবিচ্ছিন্ন থেকে কোন যাজক কিন্তু লোকদের সেবা করতে পারেন না বা তার সেই অধিকারও থাকে না। জগতে যাজকদের জন্য বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং। একদিকে তাদের অভিষেক ও সেবাকার্য দাবী করে যেন তারা জগতের বিষয়ে অনুরক্ত হয়ে না পড়েন[20]দ্র: রোমীয় ১২: ২, আবার মেষদের জানতে ও যত্ন নিতে তাকে মেষপালের সাথেই থাকতে হয়, যারা তার পালের মেষ নয় তাদের পালে নিয়ে আসতে হয় যেন তারাও উত্তম মেষপালক খ্রিস্টের কন্ঠ শুনতে পায়[21]দ্র: যোহন ১০: ১৪-১৬। পালক তার মেষের যত্নে এমন আন্তরিকভাবে নিবিষ্ট থাকেন যে তিনি সৌরভিত হয়ে ওঠেন মেষেদের গন্ধে (smell of the sheep)।[22]অনুচ্ছেদ ৭-৯, প্রথম অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান … Continue reading

যাজকদের সেবাকার্য:

ক্যাথলিক মণ্ডলীতে যাজকদের ত্রিমুখী কার্যাবলী মূল সেবাকার্যরূপে বিবেচিত হয়: ঐশবাণীর সেবাকর্ম, সংস্কার ও খ্রিস্টপ্রসাদের সেবাকর্ম এবং ঐশ জনগণের পরিচালনা।[23]দ্বিতীয় অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা

ক) যাজকগণ ঐশবাণীর সেবাকর্মী:

ঐশ জনগণ অর্থাৎ মণ্ডলীর কেন্দ্রবিন্দুতে আছে ঐশবাণী, যার শক্তিতে ঈশ্বরের জনগণ এক থাকে এবং বৃদ্ধি পায়।[24]দ্র: ১ পিতর ১: ২৩, শিষ্যচরিত ৬: ৭; ১২: ২৪ যাজকের দায়িত্ব তার মুখ দিয়ে ঐশবাণী’র যথার্থ সন্ধান দান করা।[25]দ্র: মালাখি ২: ৭, ১ তিমথি ৪: ১১-১৩, ২ তিমথি ৪: ৫, তীত ১: ৯ মানুষের পরিত্রাণের জন্য যাজকগণ ঐশবাণী প্রচার করেন যেন জনগণ বিশ্বাসী হয়ে ওঠে। পালিত হয় প্রভুর আদেশ, “তোমরা জগতের সর্বত্রই যাও; বিশ্ব সৃষ্টির কাছে তোমরা ঘোষণা কর মঙ্গলসামাচার” (মার্ক ১৬: ১৫)। মঙ্গলসমাচারের অন্তর্নিহিত সত্য প্রত্যেকের সাথে সহভাগিতা করা যাজকগণের বাধ্যতামূলক কর্তব্য।[26]দ্র: গালাতীয় ২: ৫ এই কাজে ঐতিহ্যগত এবং আধুনিক বিভিন্ন উপায় ও পদ্ধতি তারা অবলম্বন করতে পারে। অ খ্রিস্টান এলাকায় বিশ্বাস বিস্তার করা হয় বাণী প্রচার এবং সংস্কার প্রদানের মাধ্যমে।[27]দ্র: মথি ২৮: ১৯, মার্ক ১৬: ১৬ আবার খ্রিস্টান সমাজে বাণী প্রচার করা হয় হয় পবিত্র সংস্কারসমূহ সম্পাদনের মাধ্যমে, কারণ সংস্কারসমূহ হলো বিশ্বাসেরই চিহ্ন। খ্রিস্টযাগে বাণী অনুষ্ঠান খ্রিস্টসমাজে বাণী প্রচারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খ্রিস্টান এবং অ খ্রিস্টান যে কোন সমাজে বাণীর সেবাকর্মী হিসেবে সেবাদায়িত্বসমূহ যাজকগণ গুরুত্বের সাথে পালন করেন।

খ) যাজকগণ সংস্কার ও খ্রিস্টপ্রসাদের সেবাকর্মী:

একমাত্র ঈশ্বরই পবিত্র এবং তিনি একাই জগতকে পবিত্র করতে পারেন। তথাপি তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেন পবিত্রকরণের কাজে মানুষকে সাথে নেয়ার যেন মানুষ বন্ধু ও সাহায্যকারী হিসেবে বিনয়ী সেবাকারী হয়ে উঠতে পারে। বিশপদের সেবাকর্মে যাজক হিসেবে অভিষিক্ত হয়ে একজন খ্রিস্টভক্ত তাই খ্রিস্টের যাজকত্বে সহভাগী হয়ে ওঠে। এইভাবে যাজকগণ পবিত্রকরণের কাজে ঈশ্বরের সেবাকারী হয়ে ওঠেন। পবিত্র সংস্কার সমূহের মাধ্যমে যাজক অনবরত এই পবিত্রীকরণের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দীক্ষা-সংস্কারের মাধ্যমে তিনি লোকদের ঐশজনগণের অন্তর্ভূক্ত করেন, পুনর্মিলন সংস্কারের মাধ্যমে পাপীকে ঈশ্বর ও মণ্ডলীর কাছে ফিরিয়ে আনেন, রোগীলেপন সংস্কারের মাধ্যমে লোকদের দান করেন উপশম। বিশেষতঃ যাজক খ্রিস্টযাগ উৎসর্গের মাধ্যমে সাংস্কারিকভাবে খ্রিস্টের বলিদান উৎসর্গ করেন। প্রকৃতপক্ষে অন্য সমস্ত সংস্কার এবং মণ্ডলীর সকল প্রৈরিতিক সেবাকর্ম খ্রিস্টপ্রসাদেরই সাথে সংযুক্ত এবং এর দিকেই পরিচালিত।[28]খ্রীষ্টপ্রসাদ হচ্ছে আধ্যাত্মিক জীবনের পূর্ণতা এবং সমস্ত সংস্কারের … Continue reading খ্রিস্টপ্রসাদে খ্রিস্ট নিজেই বলিকৃত হন এবং আমাদের নিস্তার ভোজ ও জীবন্ত রুটি হয়ে ওঠেন। এই কারণে খ্রিস্টপ্রসাদ হলো সব ধরণের প্রচার কাজের শীর্ষ ও উৎস।

গ) যাজকগণ ঐশ জনগণের পরিচালক:

যাজকগণ বিশপের নামে মণ্ডলীতে ঐশ জনগণকে একটি বড় পরিবারে সম্মিলিত করেন এবং পিতা ঈশ্বরের দিকে তাদের চালিত করেন।[29]খ্রীষ্টমণ্ডলী বিষয়ক সংবিধান, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা মণ্ডলী গড়ে তোলা তাদের কাজ আর এই কাজে তারা যীশুর মহানুভবতামূলক ব্যবহার ঐশ জনগণের সাথে সহভাগিতা করেন। তিনি তা করেন জনগণকে সন্তুষ্ট করার জন্য নয়[30]দ্র: গালাতীয় ১: ১০ বরং খ্রিস্টিয় শিক্ষা ও জীবনাদর্শের চাহিদানুযায়ী। যেমন প্রেরিতশিষ্যরা বলেন: “ঐশবাণী প্রচার কর, সময়ে অসময়ে উদ্যমের সঙ্গেই তা কর; মানুষের যত ভুল ধারণা ভেঙ্গে দাও, তাকে তিরস্কার কর, তার কাছে একান্ত আবেদন জানাও- আর সর্বদাই সহিষ্ণু হয়ে ধর্মশিক্ষা দেবার উদ্দেশ্য নিয়েই ওই সব-কিছু কর।” (২ তিমথি ৪:২) ভক্তজনগণ যেন মঙ্গলসমাচারের শিক্ষা অনুযায়ী নিজ নিজ জীবন আহ্বান উপলব্ধি করে বিকাশ করতে পারে এবং খ্রিস্টের দেয়া মুক্তি লাভ করতে পারে[31]দ্র: গালাতীয় ৪: ৩; ৫: ১,১৩ সেই লক্ষ্যে পরিচালনা দান করা যাজকের অন্যতম প্রধান কার্যাবলী। একটি ধর্মপল্লীতে অনেক জাঁকজমকপূর্ণ সুন্দর অনুষ্ঠান হতে পারে, সভা-সমিতিগুলো অনেক সক্রিয়ও হতে পারে, তথাপি এই সমস্ত কিছুর উদ্দেশ্য যদি না হয় খ্রিস্টিয় জীবনে পূর্ণাঙ্গ বিকাশ, তাহলে তা খুব কমই ফল বয়ে আনবে।[32]: সাধু জেরোম, পত্র, ৫৮,৭: “খ্রীষ্টই যখন দরিদ্র মানুষের মধ্যে মারা যাচ্ছেন, তখন … Continue reading

যদিও সকল মানুষের সেবা করা যাজকের কর্তব্য তথাপি গরীব ও দুর্বলদের পক্ষালম্বন এবং তাদের সেবা করার বিশেষ দায়িত্ব যাজকের উপর ন্যস্ত। গরীব ও দুর্বলদের কাছে মঙ্গলসমাচার প্রচার করা খ্রিস্টিয় প্রৈরিতিক কাজের শক্তিশালী চিহ্ন।[33]দ্র: মথি ২৫: ৩৪-৩৫ পাশাপাশি যুব এবং দম্পতিদের জন্য বিশেষ সেবাকাজ যাজকদের নিকট মণ্ডলী কর্তৃক অর্পিত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। যাজকগণের নিকট সন্ন্যাসব্রতী ব্রাদার ও সিস্টারগণের প্রতি বিশেষ যত্ন এবং রোগী ও মুমূর্ষদের প্রতি একান্ত অনুরাগ ভাটিকান মহাসভা প্রত্যাশা করে।

যাজকের দায়িত্ব শুধুমাত্র বিশ্বাসী ভক্তজনগণের যত্নই নয়, বরং খ্রিস্টিয় সমাজ গঠন করার জন্যও তার দায়বদ্ধতা আছে।মণ্ডলীর যে সামাজিক মনোভাব, তা সঠিকভাবে চর্চার জন্য স্থানীয় মণ্ডলীর সাথে সাথে বিশ্ব মণ্ডলীর ভাবধারাও স্থানীয় মণ্ডলীতে স্থান দিতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় কোন একটি নির্দিষ্ট খ্রিস্টিয় সমাজের মধ্যে প্রৈরিতিক মনোভাব সঞ্চারিত হয় এবং তারা ধীরে ধীরে সকল মানুষকে খ্রিস্টের পথে যেতে প্রস্তুত করতে উদ্যোগী হয়ে ওঠে। স্থানীয় খ্রিস্টিয় সমাজের ভিত্তি এবং প্রাণ সঞ্চারিত হয় পবিত্র খ্রিস্টযাগ উদযাপনে। এই সমাজ গঠনে মানবিক প্রয়োজনের দাস না হয়ে একজন যাজককে হয়ে উঠতে হয় মঙ্গলসমাচারের অগ্রদূত।

যাজকদের সম্পর্কের ধরণ:

বিশপের সাথে: যাজকগণ ডাইয়োসিসের বিশপ, অন্যান্য সকল যাজক এবং সাধারণ খ্রিস্টভক্তদের সাথে ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্ক অনুলীলন এবং রক্ষা করে। [34]দ্বিতীয় অধ্যায়, প্রেসবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা যাজকগণ খ্রিস্টের সাথে এক এবং অভিন্ন যাজকত্বের অংশীদার ডাইয়োসিসের বিশপের সাথে সংযুক্ত থেকে। বিশপ ও যাজকগণ একই যাজকত্ব সহভাগিতা করেন, তাই তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক হতে হবে ভাই এবং বন্ধুর মত। যাজকদের পবিত্রীকরণের দায়িত্ব বিশপের উপরে ন্যস্ত। ডাইয়োসিসের মঙ্গল এবং পালকীয় কাজের জন্য বিশপ তার যাজকদের সাথে পরামর্শ করেন, তাদের মতামত শোনেন এবং মন্ত্রণা পরিষদ সভাও আয়োজন করেন। যাজকবরণ সংস্কারের পরিপূর্ণতা একমাত্র বিশপগণই ভোগ করেন। তাই ভালবাসা ও বাধ্যতার সাথে বিশপদের সাথে যুক্ত থাকা যাজকদের অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব।

অন্যান্য যাজকদের সাথে: যাজকগণ পরস্পরের সাথে সংস্কারের বন্ধনে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কে যুক্ত। তাই ডাইয়োসিসে বিশপের নেতৃত্বে তারা গঠন করে যাজক সংঘ। কারণ ভিন্ন ভিন্ন কাজ করলেও সম্মিলিতভাবে সকলে একই যাজকীয় সেবা কাজ সম্পাদন করেন। তাই যাজকবরণ সংস্কারে আমরা দেখি যাজক পদে মনোনীত প্রার্থীর মাথার উপর হস্ত স্থাপনের সময়ে বিশপের সাথে উপস্থিত সকল যাজকদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রবীণ পুরোহিতদের দায়িত্ব নবীণ পুরোহিতদের ভাই বলে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করা, সেবাকর্মে অসুবিধা হলে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া, প্রয়োজনবোধে সমাধান দেয়া।

খ্রিস্টভক্তদের সাথে: খ্রিস্টভক্তদের মধ্যে যাজকেরা হলেন ভাইদের মধ্যে ভাই কারণ যাজক ও সাধারণ খ্রিস্টভক্ত সকলেই দীক্ষাস্নানে এক নতুন জন্ম  গ্রহণ করেছে। এভাবেই গড়ে ওঠে খ্রিস্টের অতীন্দ্রিয় দেহ, যা গড়ে তোলার আদেশ দেয়াই হয়েছে।[35]দ্র: এফেসীয় ৪: ৭, ১৬ এই দেহে বিশপগণ ডিকন এবং যাজকগণের উপরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন না এবং যাজকগণও নিজেদের জনগণের উপরে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন না, কারণ সকল পর্যায়ের সদস্য ছাড়া মণ্ডলী গড়ে উঠতে পারে না।[36]দ্র: প্রৈরিতিক সংবিধান: ৮,১,২০ পিতা এবং ভ্রাতাসুলভ ভালবাসা ও যত্নে খ্রিস্টভক্তদের সেবা করা যাজকদের দায়িত্ব।[37]দ্র: মথি ২০: ২৮ খ্রিস্টভক্তদেরও কর্তব্য সন্তানসুলভ মনোভাব নিয়ে যাজককে তাদের পিতা ও পালকরূপে বিবেচনা করা, যাজকদের মানবিক দুঃশ্চিন্তা, চাপ, উৎকন্ঠার কিছুটা ভাগ নেয়া, সর্বক্ষণ যাজকদের জন্য প্রার্থনা করে যাওয়া। খ্রিস্টভক্তদের নিরন্তর প্রার্থনা যাজকদের পবিত্র করে এবং তাদের  খ্রিস্টের যাজকত্বে উপযুক্ত সেবাকারীতে পরিণত করে।

পুরোহিতদের জীবনে আধ্যাত্মিক প্রয়োজনীয়তা:

নম্রতা ও বাধ্যতা, কৌমার্য, স্বেচ্ছাকৃত দারিদ্র পুরোহিতদের জীবনের আধ্যাত্মিক প্রয়োজনীয়তা এবং নির্যাস।[38]তৃতীয় অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
নম্রতা ও বাধ্যতা: পুরোহিতদের মধ্যে প্রয়োজনীয় মনোভাব হচ্ছে- আমার ইচ্ছা নয়, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তার ইচ্ছাই পালন করতে হবে।[39]দ্র: যোহন ৪: ৩৪, ৫: ৩০, ৬: ৩৮ যাজকের যে কোন সাধনা ও পরিশ্রম হবে তাই নম্রতার সাথে। যে কোন কাজেই তার আত্ম জিজ্ঞাসা হবে ঈশ্বর কিসে সন্তুষ্ট হন?[40]দ্র: এফেসীয় ৫: ১০ জীবনভর পুরোহিতকে সচেতন থাকতে হয় যে কোন ব্যক্তিগত যোগ্যতায় তিনি যাজক পদে অভিষিক্ত হননি, বরং ঈশ্বরই অনুগ্রহ করে তাকে ডেকেছেন। যীশু খ্রিস্টের মত হয়ে ওঠার সাধনায় যাজকদের এই নম্রতা এবং বাধ্যতার অনুশীলন করে যেতে হয় কারণ যীশু “যিনি নিজেকে রিক্ত করলেন, দাসের স্বরূপ গ্রহণ করলেন … মৃত্যু পর্যন্ত বাধ্য হলেন” (ফিলিপ্পীয় ২: ৭-৯)। আবার বাধ্যতা দ্বারাই মহাযাজক যীশু আদম ও হবার অবাধ্যতাকে জয় ও মুক্ত করেছিলেন।[41]দ্র: রোমীয় ৫: ১৯

কৌমার্য: ঐশরাজ্যের জন্য কৌমার্য উপহার যীশু খ্রিস্ট কর্তৃক অনুমোদিত।[42]দ্র: মথি ১৯: ১২ অনেক খ্রিস্টভক্ত স্বেচ্ছায় তা গ্রহণ ও পালন করেন। যাজকীয় জীবনের অঙ্গরূপে কৌমার্যকে মণ্ডলীও শ্রদ্ধার চোখে গণ্য করে। যাজকত্বের প্রকৃতিগত দিক কৌমার্য দাবী করে না। তথাপি চিরকৌমার্য যাজকবরণের সাথে সঙ্গতি বজায় রাখে মণ্ডলীতে ঐতিহ্যগতভাবে। যাজক মানব সমাজের সেবায় নিযুক্ত, যা’র জন্ম দিয়েছেন যীশু খ্রিস্ট “রক্তগত জন্মে নয়, দেহের বাসনা থেকে নয়, পুরুষের কামনা থেকেও নয়- তাদের এই জন্ম ঈশ্বর থেকেই” (যোহন ১: ১৩)। এই ঐশরাজ্যের জন্য চিরকৌমার্য পালনের মধ্য দিয়ে সংসার, জাগতিকতাকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ হৃদয়টাই যাজক উৎসর্গ করতে পারেন যীশু খ্রিস্টকে, তার মণ্ডলীর সেবাকাজে।

স্বেচ্ছাকৃত দারিদ্র: যাজকেরা যদিও জগতেই বাস করেন, তথাপি তাদের উপলব্ধিতে থাকতে হয় যে তারা এই জগতের মানুষ নন।[43]দ্র: যোহন ১৭: ১৪-১৬ তাই ব্যক্তিগত প্রয়োজনে জগতে সম্পদ নিষ্প্রয়োজন। আবার মণ্ডলীর প্রেরণকাজ পরিচালনার জন্য সম্পদ প্রয়োজন। তাই পরমেশ্বর যা কিছু দিয়েছেন তার জন্য পরমেশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে সন্তুষ্ট থাকা পুরোহিতের কর্তব্য। আবার সম্পদ ও বস্তু ব্যবহারে ঈশ্বরের ইচ্ছা কি সেই অনুসারে যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয় তার দিকে পুরোহিতদের বিশেষ সাবধানী হতে হয়। মণ্ডলীর সম্পদের ব্যবস্থাপনা তাই যাজককে করতে হয় যতদূর সম্ভব দক্ষ খ্রিস্টভক্তদের সাহায্য নিয়ে। নিজেদের জীবন মান বজায় রেখে ভরণ-পোষণ, ঐশ উপাসনা এবং যাজক পদের অন্যান্য দায়িত্ব পালন এবং মানুষের সাহায্যার্থে একজন পুরোহিত নিজের অধিকারে থাকা সম্পদ স্বচ্ছতা বজায় রেখে ব্যবহার করতে পারে।

উপসংহার:

যাজকীয় এবং সন্ন্যাসব্রতী জীবনে আহ্বান একান্তই ঐশ্বরিক অনুগ্রহ। পরমেশ্বরই একজন ব্যক্তিকে আহ্বান করেন, মনোনীত করেন এবং নির্ধারিত সেবাদায়িত্ব প্রদান করেন। মানুষ হিসেবে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করি। যাজকীয় অভিষেক স্থানীয় মণ্ডলীর জন্য এক মহা আশীর্বাদ। যাজকীয় জীবনে আহ্বান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন খ্রিস্টভক্তদের প্রচুর প্রার্থনা, ত্যাগস্বীকার ও আদর্শ। পরিবারে প্রার্থনার পরিবেশ, বিশ্বাসের পরিচর্যার পরিবেশ ছেলে-মেয়েদের হৃদয়কে উন্মুক্ত করে, যেন তারা ঐশ পরিকল্পনা আবিষ্কারে মনযোগী হয়। যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীদের জন্য সুন্দর চিন্তা পরিবারে রাখা প্রয়োজন। তারা মানুষ এবং মানবীয় কারণে তারাও দোষ-ত্রুটি মুক্ত নয়। সন্তানদের সম্মুখে তাই দোষ-ত্রুটিগুলো পরিহার করে যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীদের নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা আহ্বান আবিষ্কারে সহায়ক হবে।

References

References
1 অনুচ্ছেদ-১, ভূমিকা, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
2 অনুচ্ছেদ-৬, দ্বিতীয় অধ্যায়, লুমেন জেন্সিউম, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
3 অনুচ্ছেদ-২, প্রথম অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
4 অনুচ্ছেদ-৩, প্রথম অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
5 অনুচ্ছেদ-৫, প্রথম অধ্যায়,প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
6 দ্র: ১ তিমথি ৪:১৪, ৫:২২
7 দ্র: ১ তিমথি ৫:১৭
8 দ্র: যাকোব ৫: ১৩-১৫
9 দ্র: মথি ২১:২৩, শিষ্যচরিত ৪:২৩
10 দ্র: শিষ্যচরিত ১:২০
11 দ্র: সাধু ইগ্নাসিয়াস রচিত ম্যাগনিসিয়দের কাছে পত্র ৬:১, ত্রালিয়দের কাছে পত্র ২: ১-৩, স্মিরিয়দের কাছে পত্র ৮:১-২
12 দ্র: শিষ্যচরিত ২০: ১৭
13 দ্র: শিষচরিত ২০: ২৮
14 দ্র: শিষচরিত ২০: ১৭-১৮ক
15 দ্র: শিষচরিত ২০: ২৮খ
16 দ্র: তীত ১: ৫
17 দ্র: ১ তিমথি ৫: ১৭-২২
18 দ্র: হিব্রু ২: ১৭; ৪-১৫
19 দ্র: শিষ্যচরিত ১৩: ২
20 দ্র: রোমীয় ১২: ২
21 দ্র: যোহন ১০: ১৪-১৬
22 অনুচ্ছেদ ৭-৯, প্রথম অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
23 দ্বিতীয় অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
24 দ্র: ১ পিতর ১: ২৩, শিষ্যচরিত ৬: ৭; ১২: ২৪
25 দ্র: মালাখি ২: ৭, ১ তিমথি ৪: ১১-১৩, ২ তিমথি ৪: ৫, তীত ১: ৯
26 দ্র: গালাতীয় ২: ৫
27 দ্র: মথি ২৮: ১৯, মার্ক ১৬: ১৬
28 খ্রীষ্টপ্রসাদ হচ্ছে আধ্যাত্মিক জীবনের পূর্ণতা এবং সমস্ত সংস্কারের লক্ষ্য।”- সাধু টমাস
29 খ্রীষ্টমণ্ডলী বিষয়ক সংবিধান, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
30 দ্র: গালাতীয় ১: ১০
31 দ্র: গালাতীয় ৪: ৩; ৫: ১,১৩
32 : সাধু জেরোম, পত্র, ৫৮,৭: “খ্রীষ্টই যখন দরিদ্র মানুষের মধ্যে মারা যাচ্ছেন, তখন রত্নখচিত দেয়াল যদি চকচক করে তাহলে কি লাভ?
33 দ্র: মথি ২৫: ৩৪-৩৫
34 দ্বিতীয় অধ্যায়, প্রেসবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
35 দ্র: এফেসীয় ৪: ৭, ১৬
36 দ্র: প্রৈরিতিক সংবিধান: ৮,১,২০
37 দ্র: মথি ২০: ২৮
38 তৃতীয় অধ্যায়, প্রেসেবিতেরোরুম অর্দিনিস, দ্বিতীয় ভাটিকান মহাসভা
39 দ্র: যোহন ৪: ৩৪, ৫: ৩০, ৬: ৩৮
40 দ্র: এফেসীয় ৫: ১০
41 দ্র: রোমীয় ৫: ১৯
42 দ্র: মথি ১৯: ১২
43 দ্র: যোহন ১৭: ১৪-১৬

Leave a Reply